পোকা ছাড়া কোনো খাবার খেতে পারেন না যে নারী

পাতে পোকা পড়লে খাবার ফেলে দেন বহু মানুষ। আবার কেউ কেউ যেখানে পোকা পড়ে সেখান থেকে ফেলে দেন। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের এক নারী কিন্তু ঠিক উল্টো কাজই করেন।

তিনি সকাল-দুপুর-রাত, যখনই খাবার খান, তার পাতে কোনো না কোনো পোকা থাকা চাই-ই চাই। নাম তার জোয়ানি টেকো। ৩০ বছর বয়সি জোয়ানি সমাজমাধ্যমে জানিয়েছেন, পোকামাকড়ের ব্যাপারে অদ্ভুত মোহ রয়েছে তার। তাই পোকামাকড় ছাড়া কোনো খাবার খেতে পারেন না তিনি। কীটপতঙ্গ খাওয়ার এই বিষয়টিকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে ‘এন্টোমোফ্যাগি’।

জোয়ানির দাবি, তিনি যে যে খাবার খান, সেগুলো অত্যন্ত সুস্বাদু। কখনো ঝিঁঝিঁ পোকা শুকিয়ে গুঁড়া করে সেই গুঁড়া তিনি ছড়িয়ে দেন সালাদের উপর। কখনো আবার বিশেষ ধরনের শুঁয়োপোকা ও কিউয়ি ফল দিয়ে তৈরি করেন তরকারি। বিভিন্ন ধরনের পতঙ্গ একসঙ্গে মিশিয়ে তৈরি করা ‘টাকো’ এবং বিশেষ ভাবে তৈরি করা পোকার বিস্কুট খেতেও দারুণ পছন্দ করেন তিনি, জানিয়েছেন জোয়ানি।

কোন পোকা কেমন খেতে, তাও বিস্তারে জানিয়েছেন পোকাপ্রেমী জোয়ানি। সমাজমাধ্যমে তিনি দাবি করেছেন, ‘মিলওয়ার্ম’ বলে এক ধরনের পোকা নাকি অবিকল মাংসের মতো খেতে। পিঁপড়ের স্বাদ নোনতা। আর ঝিঁঝিঁ পোকা খেতে বাদামের মতো। তার সবচেয়ে প্রিয় পোকা— ‘বাম্বু ওয়ার্ম’। এই পোকা একবার হাতের কাছে পেলে কার্যত চিপ্‌স খাওয়ার মতো সেগুলো খেয়ে ফেলেন তিনি।

জোয়ানিকে দেখে অনেকেরই মনে পড়ে যাচ্ছে ‘লায়ন কিং’ ছবির টিমন আর পুম্বার কথা। দিনরাত পোকা খেত তারাও। তবে জোয়ানি কিন্তু বলছেন, সব পোকাই খেতে সুস্বাদু নয়। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেছেন কাঁকড়াবিছের কথা। চকলেটে মাখিয়ে খেলেও বিশেষ কোনো স্বাদ নেই সেগুলোর, দাবি তার।

জোয়ানি জানিয়েছেন, ২০১৭ সালে তার বাবা এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ঘুরতে গিয়ে কিছু পোকামাকড়ের তৈরি খাবার নিয়ে আসেন বাড়িতে। তখনই প্রথম বার পোকা খাওয়া শুরু করেন তিনি। বিষয়টি তার এতোই ভালো লেগে যায় যে, আর পোকা খাওয়া বন্ধ করেননি।

শুধু স্বাদ নয়, এই খাদ্যাভাস পরিবেশবান্ধব বলেও দাবি তার। আরো বেশি মানুষ যাতে পোকামাকড় থেকে তৈরি খাবার খাওয়ার সুযোগ পান, তাই নিজের একটি খাদ্যপ্রস্তুতকারক সংস্থাও তৈরি করেছেন জোয়ানি। পোকা থেকে তৈরি বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি করে তার সংস্থা।